নয়াদিল্লি: ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চল নিয়ে চার দেশের একটি জোট তৈরি হয় ২০০৭ সালে৷ যে জোটে ভারত ছাড়াও রয়েছে অস্ট্রেলিয়া, জাপান ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র৷ পোশাকি নাম কোয়াড্রিল্যাটারাল সিকিউরিটি ডায়লগ হলেও যা কোয়াড নামে পরিচিত। চিনের প্রভাব রুখতে ২০১৭ সাল থেকে এই জোট অনেক বেশি সক্রিয়৷ শুক্রবার সেই জোটেরই ভার্চুয়াল সম্মেলন হয়৷ সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন এবং অন্য দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা৷ গত নভেম্বরে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট পদে বসার পর এই প্রথম মোদি ও বাইডেন কোনও সম্মেলনে অংশগ্রহণ করলেন৷ এদিন মোদির উদ্দেশ্যে বাইডেনের বার্তা, ‘আপনার সঙ্গে দেখা হয়ে ভলো লাগছে প্রধানমন্ত্রী মোদী৷’
অন্যদিকে মোদী তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, ‘বন্ধুদের মধ্যে আসতে পেরে ভালো লাগছে৷ বাইডেনকে ধন্যবাদ দেব এই উদ্যোগ নেওয়ার জন্য৷ আমরা আমাদের গণতান্ত্রিক নীতির মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধ রয়েছি৷ আর ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে মুক্ত ও অবাধ রাখতে বদ্ধপরিকর৷ ভ্যাকসিন, জলবায়ু পরিবর্তন ও প্রযুক্তি নিয়ে এই কোয়াড বিশ্বের ভালোর জন্য কাজ করছে৷’
শুক্রবার, ঐতিহাসিক প্রথম কোয়াড শীর্ষবৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বললেন, কোয়াড আসলে ভারতীয় দর্শন ‘বসুধৈব কুতুম্বকম’এরই একটি পরিবর্ধিত রূপ। কোয়াড, অর্থাৎ ভারত, জাপান, অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র – এই চার দেশের রাষ্ট্রগোষ্ঠী, যাদের মূল লক্ষ্য ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকাকে কোনও নির্দিষ্ট দেশের, বিশেষত চিনের কবলমুক্ত রাখা। দীর্ঘদিন ধরে বেসরকারি ভাবে এই রাষ্ট্রগোষ্ঠী বেশকিছু সামরিক অনুশীলন ও অসামরিক বৈঠক করলেও, গত বছর থেকেই প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে এই রাষ্ট্রগোষ্ঠী চেহারা পেতে থাকে।
এদিনের ভার্চুয়াল বৈঠকে, প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, দীর্ঘ সময় পার করে এখন, কোয়াড গোষ্ঠী ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হিসাবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। এই গোষ্ঠীকে তিনি বৈশ্বিক মঙ্গলের শক্তি বলেও বর্ণনা করেন। তিনি জানান, ভ্যাকসিন বিতরণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং উদীয়মান প্রযুক্তির মতো বৈশ্বিক কল্যাণের বিষয়ে কোয়াড আলোচনা করে। আসলে কোয়াড হ’ল ভারতের ‘বসুধৈব কুতুম্বকম’এর সম্প্রসারণ। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ধর্মনিরপেক্ষতা, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির মতো চার দেশের সাধারণ মূল্যবোধকে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে একত্রিত হয়ে কাজ করার প্রতিশ্রতিও দেন মোদী।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনও ইন্দো-প্যাসিফিক অঞ্চলকে আন্তর্জাতিক আইন মেনে অবাধ রাখার বিষয়ে জোর দিয়েছেন৷ আর নাম না করে তিনি চিনের সমালোচনা করেছেন৷