কলকাতা: পুজোর আগে রাজ্যের বকেয়া নির্বাচন ও উপনির্বাচন মিটিয়ে ফেলার দাবি জানিয়েছিল তৃণমূল।সেই দাবি পুরোপুরি না মানলেও কেবলমাত্র ভবানীপুর কেন্দ্রের উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করল নির্বাচন কমিশন৷ ওই কেন্দ্রে ভোট হবে ৩০ সেপ্টেম্বর৷ ভোট গণনা ৩ অক্টোবর৷ চলতি মাসে ১৩ তারিখ মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন৷রাজ্যের পাঁচটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন এবং দুটি কেন্দ্রে নির্বাচন বকেয়া৷ কিন্তু কমিশন কেবলমাত্র ভবানীপুর কেন্দ্রে উপনির্বাচনর দিন ঘোষণা করেছে৷ বাকি চারটি কেন্দ্রের উপনির্বাচন কবে হবে জানায়নি৷ তবে ওই দিনই ভবানীপুরের সঙ্গে মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুর কেন্দ্রেও নির্বাচন হবে৷ প্রার্থীর অকাল মৃত্যুর কারণে ওই দুটি কেন্দ্রে ভোট স্থগিত রেখেছিল কমিশন৷ সেই দুটি কেন্দ্রে এবার ভোট হবে৷।
আসন থেকে আগে দু’বার জিতেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সালে বামফ্রন্ট সরকারকে সরিয়ে রাজ্যে ক্ষমতায় এসেছিল তৃণমূল। সেই সময় ভবানীপুর আসন থেকে উপনির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন মমতা। তারপর ২০১৬-র বিধানসভা নির্বাচনেও এই আসন থেকেই জয়ী হয়েছিলেন তিনি। কিন্তু, ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনে বদলে গিয়েছিল, নন্দীগ্রাম আসন থেকে লড়াই করেছিলেন মমতা। সেখানে তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিজেপির শুভেন্দু অধিকারী। ওই আসনে টানটান লড়াইয়ের পর মমতাকে পিছনে ফেলে জয়ী হন শুভেন্দু। সামান্য কিছু ভোটের ব্যবধানে মমতাকে হারিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। যদিও বিপুল সংখ্যক ভোট পেয়ে ফের রাজ্যে ক্ষমতায় আসে তৃণমূল। তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেন মমতা। তবে ৫ নভেম্বরের মধ্যে কোনও এক বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জিততে হবে তাঁকে। তাই রাজ্যের উপনির্বাচন দ্রুত করানোর দাবি জানাচ্ছিল তৃণমূল। এই দাবি জানিয়ে একাধিকবার জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়েছিল তৃণমূলের প্রতিনিধি দল। যদিও করোনা পরিস্থিতির মধ্যে ভোট করানো সঠিক হবে না বলে জানিয়েছিল বিজেপি। নিজেদের মত জানিয়ে নির্বাচন কমিশনে চিঠিও দিয়েছিল তারা। বেশ কয়েক মাস ধরেই এনিয়ে টানাপোড়েন চলছিল। অবশেষে কাটল সেই জট। ৩০ সেপ্টেম্বর ভবানীপুর আসনে উপনির্বাচন ও মুর্শিদাবাদের সামশেরগঞ্জ এবং জঙ্গিপুর বিধানসভা কেন্দ্রে নির্বাচনের কথা ঘোষণা করল কমিশন।
তিনটি আসনেই মনোনয়ন জমা দেওয়ার শেষ দিন ১৩ সেপ্টেম্বর। আর মনোনয়ন প্রত্যাহারের শেষ দিন ১৬ সেপ্টেম্বর। ভোট গণনা হবে ৩ অক্টোবর। যদিও রাজ্যে পাঁচ বিধানসভা কেন্দ্র গোসাবা, খড়দা, শান্তিপুর, দিনহাটা ও ভবানীপুরে উপনির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, তার মধ্যে শুধুমাত্র ভবানীপুরেই উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা করা হয়েছে। করোনাবিধি মেনে ভোট প্রচারের নির্দেশ দিয়েছে নির্বাচন কমিশন। তবে শুধুমাত্র ভবানীপুর আসনে উপনির্বাচনের দিনই কেন ঘোষণা করা হল? এবিষয়ে নির্বাচন কমিশনের তরফে লিখিত বিবৃতি জারি করে জানানো হয়েছে, ‘রাজ্যের মুখ্যসচিব জানিয়েছেন, এখন করোনা পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি এই ভোটকেন্দ্রগুলির উপর প্রভাব ফেলেনি। রাজ্য নির্বাচনের জন্য সম্পূর্ণ প্রস্তুত। রাজ্যের কোনও মন্ত্রী ৬ মাসের মধ্যে ভোটে জিতে না এলে তৈরি হবে সাংবিধানিক সঙ্কট। সংবিধানের ১৬৪(৪) নম্বর ধারা দেখিয়ে এই উদাহরণ দিয়েছেন মুখ্যসচিব। সাংবিধানিক প্রয়োজনীয়তা মেনে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের বিশেষ অনুরোধে ভবানীপুরে ভোটের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।’