in খেলা, ,

ওডিশার বিরুদ্ধে অনবদ্য জয় এটিকে এমবির

গোয়া: মনবীরের জোড়া গোলে এগিয়ে যাওয়ার পরে রয় কৃষ্ণার জোড়া গোল শনিবার বাম্বোলিমে প্রত্যাশিত জয় এনে দিল এটিকে মোহনবাগানকে। এই নিয়ে চার গোল করে ফেললেন মনবীর। চলতি হিরো আইএসএলে সুনীল ছেত্রী ছাড়া একজন ভারতীয় ফরোয়ার্ডের এমন সাফল্য সচরাচর খুব একটা দেখা যায়নি। সবুজ-মেরুন কোচ আন্তোনিও লোপেজ হাবাসের গলাতেও তাঁকে নিয়ে প্রশংসা শোনা গেল শনিবার ম্যাচের পরে। কোচ বলেন, “মনবীর আমাদের দলের গুরুত্বপূর্ণ সদস্য। আজ ও দুর্দান্ত খেলেছে। ওর প্রতি আমাদের যথেষ্ট আস্থা রয়েছে। আসন্ন ম্যাচগুলোতে ওকে আরও ধারাবাহিক হতে হবে। এটাই এখন মনবীরের কাছে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ”।

এ দিন ১১ মিনিটের মাথায় বক্সের বাঁ দিক থেকে মার্সেলিনহোর ক্রসে পাওয়া বল প্রণয় হালদার দেন বক্সের মাথায় থাকা রয় কৃষ্ণাকে। বক্সের ডান দিকে থাকা মনবীরকে পাস দেন তিনি। বাঁ পায়ে হাওয়ায় ভাসানো শটে গোলের বাঁ দিকের কোন দিয়ে তিনি বল ঢুকিয়ে দেন গোলে। এমন অসাধারণ কার্লিং শটে গোল এ বারের হিরো আইএসএলে সম্ভবত আর হয়নি।

৫৪ মিনিটের মাথায় বক্সের মাথা থেকে দেওয়া রয়ের ক্রস নিয়ে ডান দিকের উইং দিয়ে ওঠা মনবীর এগিয়ে যান গোলের দিকে। প্রায় ৪৫ ডিগ্রি কোণ থেকে নেওয়া শট গোলকিপার অর্শদীপ সিংয়ের পায়ের বাঁ দিক দিয়ে গোলে ঢুকে যায়। মনবীরের দু’টি গোলের পরে ৮৩ মিনিটে পেনাল্টি থেকে নেওয়া নিখুঁত শটে গোল করে ব্যবধান বাড়ান রয়। তার তিন মিনিট পরেই ফের এক আন্তর্জাতিক মানের গোল আসে রয়ের পা থেকে।

নিজের পারফরম্যান্স নিয়ে ম্যাচের পর মনবীর হিরো আইএসএল মিডিয়াকে বলেন, “দু’গোল করে দলকে জিতিয়ে ও তিন পয়েন্ট এনে দিতে পেরে আমি খুবই খুশি। অনুশীলনে যথেষ্ট পরিশ্রম করছি আমি। নিজের সবটুকু উজাড় করে দেওয়ার চেষ্টা করি। যার ফলে উন্নতি করতে পারছি। সাফল্যের সঙ্গে এগিয়ে যেতে পারছি ও দলকেও সাহায্য করতে পারছি”।

দলের এই দাপুটে জয় নিয়ে হাবাস এ দিন বলেন, “প্রথমার্ধে আমরা ২৫-৩০ মিনিট ভাল খেলার পরে বোধহয় ঘুমিয়ে পড়েছিলাম। সেই সুযোগে প্রতিপক্ষ সমতা এনে ফেলে। দ্বিতীয়ার্ধে আমরা অনেক ভাল খেলেছি এবং গোলও করেছি”।

এই জয় গঙ্গাপাড়ের দলকে এনে দিল আরও তিন পয়েন্ট। ১৫ ম্যাচে ৩০ পয়েন্ট নিয়ে চলতি হিরো আইএসএলে শীর্ষে থাকা আরব সাগর পাড়ের মুম্বই সিটি এফসি-র (১৫ ম্যাচে ৩৩ পয়েন্ট) ঘাড়ে নিঃশ্বাস ফেলছে হাবাসের দল। লিগ শীর্ষে ওঠা নিয়ে এখনই চিন্তা ভাবনা করতে রাজি নন হাবাস। বলেন, “সেরা চারে থাকাটাই আসল ব্যাপার। সেরা চারে আগে জায়গাটা পাকা করি। তার পরে এক নম্বরে থাকা নিয়ে ভাবব। ”

অন্য দিকে ওডিশা এফসি-র ভারপ্রাপ্ত কোচ গেরাল্ড পিটন মানতে নারাজ যে রয় কৃষ্ণার পেনাল্টি থেকে পাওয়া গোলের পরেই তাঁর দল হাল ছেড়ে দেয়। ম্যাচের পরে সাংবাদিকদের তিনি বলেন, “পেনাল্টিটাই ম্যাচের টার্নিং পয়েন্ট। ২-১ হয়ে যাওয়ার পরেও আমরা লড়াইয়ে ছিলাম। বাঁ দিক দিয়ে ওঠার জন্য একজন খেলোয়াড় পরিবর্তনও করি। আমার মনে হয় না, হাল ছেড়ে দিয়েছিলাম। তবে আমরা আমাদের খেলার গতি ও ছন্দ ধরে রাখতে পারিনি, পেনাল্টির আগে যেটা ছিল”।

এ দিন প্রথমার্ধের একেবারে শেষে সাড়ে একুশ মিটার দূর থেকে নেওয়া শটে যে গোলটি করে সমতা আনেন ওডিশার দক্ষিণ আফ্রিকান মিডফিল্ডার কোল আলেকজান্দার, সেটিও বিশ্বমানের। প্রায় ৩৫ গজ দূর থেকে প্রথমে গোলের বাঁ দিকে শট নিয়েছিলেন পল রামফাংজাউভা, যা অরিন্দম ভট্টাচার্যকে পরাস্ত করে বাঁ দিকের পোস্টে লেগে ফিরে আসে বক্সের সামনে থাকা কোলের কাছে। তিনি সাড়ে ২১ মিটারের দূরপাল্লার শট নেন গোলের ডানদিকে, যা ওপরের কোন দিয়ে ঝড়ের গতিতে জালে জড়িয়ে যায়। অরিন্দম ফের ডাইভ দিয়েও বাঁচাতে পারেননি। কিন্তু হারের ফলে এই অসাধারণ গোলটিও বৃথা হয়ে যায়।

ম্যাচের পরে কোল আইএসএল মিডিয়াকে বলেন, “ওরা দ্বিতীয় গোলটা পেয়ে যাওয়ার পরে আমরা কিছুটা দমে গিয়েছিলাম। পেনাল্টিটা ওরা পায় আমার ভুলেই। হাফ টাইমের পরেও আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম যে আরও একটা গোল দিতে পারব। কিন্তু ওদের দ্বিতীয় গোলটার পরেই ছন্দ হারাই আমরা। তার পর থেকে সবই ভুলভাল হতে শুরু করে”।

What do you think?

Written by News Editor

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

শুভেন্দুকে মেদিনীপুরেই হারানোর চ্যালেঞ্জ অভিষেকের