গোয়া: শেষ মুহূর্তের গোলে জেতা ম্যাচ কার্যত হাতছাড়া হওয়াটা যে কষ্টকর, তা শুক্রবার হায়দরাবাদের বিরুদ্ধে ১-১ ড্রয়ের পরে জানাতে দ্বিধা করলেন না এসসি ইস্টবেঙ্গলের সহকারী কোচ অ্যান্থনি গ্রান্ট। তবে তাঁর দল যে লিগের সেরা দলগুলির সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করার যোগ্য হয়ে উঠেছে, এই ব্যাপারে তিনি নিশ্চিত।
শুক্রবার তিলক ময়দানের ম্যাচে হায়দরাবাদ এফসি-র দাপুটে পারফরম্যান্স সত্ত্বেও ৫৯ মিনিটে পাল্টা আক্রমণ থেকে গোল করে এসসি ইস্টবেঙ্গলকে এগিয়ে দেন নাইজেরীয় স্ট্রাইকার ব্রাইট ইনোবাখারে। ব্যবধান বাড়ানোরও সুবর্ণ সুযোগ পেয়ে গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সেই সুযোগ হাতছাড়া হয়। দুর্ভেদ্য ডিফেন্সের তৎপরতায় এই ব্যবধান স্টপেজ টাইম পর্যন্ত বজায় রাখে লাল-হলুদ বাহিনী। কিন্তু স্টপেজ টাইমে রক্ষণের মুহূর্তের ভুলে গোল শোধ করে দেন হায়দরাবাদের দলের স্প্যানিশ ফরোয়ার্ড আরিদানে সান্তানা।
ম্যাচের পর রবি ফাউলারের সহকারী গ্রান্ট ভার্চুয়াল সাংবাদিক বৈঠকে এসে বলেন, “একেবারে শেষে গোল খাওয়াটা খুব কষ্টকর। আমরা সারা ম্যাচেই নিয়ন্ত্রণ রেখেছিলাম। কিন্তু একটা (খারাপ) দৃষ্টান্তই সব আশা শেষ করে দিল। এটা মেনে নেওয়া খুব কষ্টকর। তবে এই পারফরম্যান্সই প্রমাণ করে যে সেরা চার দলের সঙ্গে লড়াই করার যোগ্যতা পাওয়া থেকে খুব দূরে নেই”।
জানুয়ারির দলবদলে একাধিক ভাল ফুটবলার দলে নিয়ে এসেছে এসসি ইস্টবেঙ্গল, যাঁরা আসার ফলে দলটার চেহারা অনেক বদলেছে। নাইজেরিয়ান স্ট্রাইকার ব্রাইট ইনোবাখারে, ডিফেন্ডার রাজু গায়কোয়াড়, অঙ্কিত মুখার্জির পর দ্বিতীয় দফায় আসেন গোলকিপার সুব্রত পাল, ডিফেন্ডার সার্থক গলুই ও মিডফিল্ডার সৌরভ। এঁরা আসায় দলের রক্ষণ ও মাঝমাঠ অনেক শক্তিশালী হয়েছে। পিলকিংটন, জাক মাঘোমার সঙ্গে ব্রাইট আক্রমণেও শক্তি বাড়িয়েছেন। এই কারণেই একটা ভাল জায়গায় আসতে অনেকসময় লেগে যায় তাদের।
গ্রান্ট এই প্রসঙ্গে বলেন, “সঠিক খেলোয়াড়দের দলে আনতে অনেক সময় লেগে গেল আমাদের। সৌরভ দাস, সার্থক গলুইরা বেশ ভাল ফুটবলার। আমরা সুযোগ পেলে এদের আগেই সই করাতাম। গত এগারোটা ম্যাচে আমাদের উন্নতি দেখেই নিশ্চয়ই সেটা বুঝেছেন আপনারা”।
এ দিনের ম্যাচে লাল-হলুদ ব্রিগেডের একমাত্র গোলদাতা ব্রাইট ইনোবাখারেরও প্রশংসা করে কোচ বলেন, “ব্রাইট যে অসাধারণ ফুটবলার, তা তো সবাই জানে। ও আমাদের দলের একজন বিশেষ খেলোয়াড়। ও দলে আরও সুযোগ পাবে। আশা করি, ও আমাদের আরও পয়েন্ট অর্জন করতে সাহায্য করবে। দল হিসেবে আমরা যথেষ্ট উন্নতি করছি বলেই এটা হচ্ছে”।
স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলা হায়দরাবাদ কোচ মানুয়েল মার্কেজ বলেন, “আমরা শেষ মুহূর্তে গোল করে ম্যাচটা ড্র রাখতে পারলাম বলেই ভাল লাগছে। কিন্তু বিপক্ষ যে ফের আমাদের আগে গোল দিয়ে দিল, এটাই খারাপ লাগছে। তবে আমরা আজ গুরুত্বপূর্ণ এক পয়েন্ট পেয়েছি”।
শুক্রবার এই ড্রয়ের জেরে সেমিফাইনালে মুম্বই সিটি এফসি (১৬ ম্যাচে ৩৪) ও এটিকে মোহনবাগানের (১৬ ম্যাচে ৩৩) জায়গা পাকা হয়ে গেল। ১৭ ম্যাচে ২৪ পয়েন্ট নিয়ে হায়দরাবাদ আপাতত তিন নম্বরে থাকলেও এফসি গোয়া (১৬ ম্যাচে ২৩), নর্থইস্ট ইউনাইটেডের (১৬ ম্যাচে ২৩) ম্যাচের সংখ্যা যেহেতু কম, তাই তাদের সেরা চারে টিকে থাকার লড়াইটা কঠিন হয়ে গেল। তবে মার্কেজ আশাবাদী, তাঁর দল সেরা চারে ওঠার লড়াইয়ে সফল হবে।