নিজস্ব প্রতিনিধি: ‘কাকে সুবিধে করে দিতে এই সূচি! দক্ষিণ ২৪ পরগণায় আমাদের জোর বেশি তাই কি সেখানে তিন দফায় ভোট? অসমের মতো রাজ্যে তিন দফায় ভোট। তামিলনাড়ুতে ২৩৪ আসনে একদিনে বিধানসভা ভোট, সেখানে বাংলার ২৯৪ আসনে হঠাৎ আট দফায় ভোটের সিদ্ধান্ত কেন?’ ঠিক এভাবেই নির্বাচন কমিশনের মতো স্বয়ংসম্পূর্ণ একটি সরকারি দফতরের উপর বিজেপি-র প্রভাব খাটানোর অভিযোগ তুলেছেন তৃণমূল সু্প্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি আরো বলেন,‘‘গত বছর বিহারে ২৩৪ আসনে ৩ দফায় ভোট হয়েছিল। কাদের সুবিধে করে দিতে এখানে ৮ দফায় ভোট?’’ পাশাপাশিই কমিশনের পর্যবেক্ষক বিবেক দুবেকে নিয়েও আপত্তি তুলেছেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘আমি এবং আমরা জানি উনি কী করে থাকেন!’’ ৮ দফায় বাংলায় ভোট করাতে কমিশনের সিদ্ধান্তের পিছনে কেন্দ্রের হাত রয়েছে বলেও অভিযোগ করেন মমতা। তিনি বলেন, ‘‘বিজেপি-র হাতে এজেন্সি রয়েছে। ভোটের আগে এজেন্সিগুলির অপব্যবহার করছে তারা। ভোটের আগে বাংলায় টাকা পাঠাচ্ছে। আমরা সব বুঝতে পারছি। কমিশনকে বলছি, টাকার খেলা বন্ধ করুন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দেশের কাজ করুন। কিন্তু তিনি তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। প্রধানমন্ত্রীও তাঁর ক্ষমতার অপব্যবহার করছেন। সব দল মিলে যদি মনে করে বাংলাকে ধ্বংস করবে, বাংলার মানুষ তার জবাব দেবেন। এক মাসে ৮ দফায় ভোট কি নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহ ঠিক করে দিয়েছে?’’ মমতার মন্তব্য, ‘‘মিস্টার নরেন্দ্র মোদী, মিস্টার অমিত শাহ, আপনাদের বলে দিচ্ছি, বাংলার মানুষ এর জবাব দেবেন! আমিই একমাত্র মহিলা মুখ্যমন্ত্রী। এক মহিলাকে এত ভয়!’’ দক্ষিণ ২৪ পরগনায় মোট ৩ দফায় ভোট হবে বলে জানিয়েছে কমিশন। তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন মমতা। তাঁর অভিযোগ, ‘‘দক্ষিণ ২৪ পরগনায় আমাদের জোর বেশি। তাই ওখানে ৩ দফায় ভোট করছে। এক জন মহিলাকে এত ভয় যে বাইরে থেকে নেতা আনতে হচ্ছে! যতই ইচ্ছা নেতা আনুক। আমরা নেতা নই, ঘর মোছার ন্যাতা। খেলা হবেই। হারিয়ে ভূত করে দেব। বাংলাকে অসম্মান করার উত্তর দেবেন মানুষ।’’
এর প্রত্যুত্তরে শুক্রবার সন্ধ্যায় বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, ‘২০১১ সালে গোটা রাজ্য ঘুরে ৭ দফায় নির্বাচন চেয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এখন তাহলে তার বিরোধিতা কেন করছেন তিনি।’এদিন শমীকবাবু বলেন, ‘বিহারের মতো রাজ্যেও ৩ দফায় ভোট হয়। সেখানে ৮ দফায় ভোট হওয়ায় দেশের সামনে মাথা হেঁট হয়ে যায় বাঙালির। গত ১০ বছরে মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যের পরিস্থিতির এতটুকু উন্নতি করতে পারেননি। বরং দমবন্ধকর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে রাজ্যে। লোকসভা নির্বাচনে যেখানে অবাধে ভোট হয়েছিল সেখানে বিজেপি জিতেছে’।