দেবাশীষ চক্রবর্তী
এসপ্ল্যানেডে কলকাতার আইকনিক হেরিটেজ মেট্রো সিনেমায় শনিবার (২০/২/২০১২) আবার শো শুরু হতে চলেছে। নতুনভাবে গড়ে ওঠা কলকাতার এই আইকনিক সিনেমা হলটি সেজে উঠেছে পুরানো এবং আধুনিকতার মিশ্রণে। মোট আসন থাকছে ৪২২ টি। এসপ্ল্যানেডের আশেপাশে যখন লাইটহাউস, রক্সি, এলিট, জ্যোতি, চ্যাপলিন, লোটাস, টাইগার এবং প্যারাডাইজের মতো অনেক হল ধীরে ধীরে বন্ধ হয়ে গেছে তখন আবার নতুন করে আশার আলো দেখাচ্ছে নতুনভাবে সেজে ওঠা মেট্রো সিনেমা। পুরানো ঝাড়বাতি, পুরানো গ্র্যান্ড সিঁড়িটি তাদের পুরানো মহিমায় ফিরিয়ে আনা হচ্ছে। মেট্রো আইনক্সটি শিল্প-স্থাপত্যের দিক থেকে হেরিটেজ বিষয়টিকে ধরে রাখছে। সব মিলিয়ে আবার শহর কলকাতায় পুরানো নস্টালজিয়াসহ ফিরে আসছে মেট্রো সিনেমা। বাঙালির এই সিনেমা সংস্কৃতির সূত্রপাত ৮৬ বছর আগে। যখন কলকাতার সিনেমাপিপাসু ব্রিটিশদের বিনোদনের জন্য মেট্রো-গোল্ডউইন-মায়ের (এমজিএম) সংস্থা— যা বিশ্বের অন্যতম পুরনো প্রযোজনা ও বিপণন (ডিস্ট্রিবিউশন) সংস্থাও বটে, তারা কলকাতার চৌরঙ্গিতে মেট্রো সিনেমা তৈরি করেছিল। বর্তমানে চারতলা জুড়ে প্রায় ৫০ হাজার বর্গফুটের বিপণি রয়েছে। আর উপরের দু’টি তল মিলিয়ে দু’টি সিনেমার স্ক্রিন করা হয়েছে। তবে একেই পুরনো কাঠামো ও তার ঐতিহ্যকে বজায় রেখে মেট্রো সিনেমাকে নতুন রূপ দেওয়া রীতিমতো কঠিন ছিল। কলকাতা পুরসভার ‘হেরিটেজ কনজ়ার্ভেশন কমিটি’ মেট্রোর বাইরের মূল কাঠামো অক্ষত রেখেই পুনর্গঠন এর নির্দেশ দিয়েছিল।মেট্রো সিনেমা হল ছিল শিল্পকলা ও স্থাপত্যের ‘আর্ট ডেকো মুভমেন্ট’-এর অন্যতম নিদর্শন। যা ১৯২০-’৩০ সালে ইউরোপ, আমেরিকা থেকে শুরু করে সারা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছিল। এই সিনেমা হলের স্থপতি ছিলেন থমাস ল্যাম্ব। ১৯৩৮ সালে মুম্বইয়ে আর একটি মেট্রো সিনেমা তৈরি করেছিলেন তিনি। ঐতিহ্যকে ধরে নতুনভাবে মেট্রো কে গড়ে তোলার মূল স্থপতি হলেন এক জন ভারতীয় তথা বাঙালি সুবীর বসু।